২১ নভেম্বর, ২০২৫

আজকের তারাবি ২৬ বুধবার,এপ্রিল ২৭,২০২২

তাবির হোসেন পাভেল

আজ ২৬তম তারাবিতে সূরা মুলক, সূরা কলাম, সূরা হাক্কাহ, সূরা মাআরিজ, সূরা নুহ, সূরা জিন, সূরা মুজ্জাম্মিল, সূরা মুদ্দাসসির, সূরা কিয়ামাহ, সূরা দাহর এবং সূরা মুরসালাত পড়া হবে। আজ পড়া হবে ২৯তম পারা। আজকের তারাবিতে পঠিতব্য অংশের বিষয়বস্তু তুলে ধরা হলো

৬৭. সূরা মুলক (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৩০, রুকু ২)
সূরায় মহান আল্লাহর ক্ষমতা, কুদরত এবং একত্ববাদ, রাজত্ব ও মালিকানার বিবরণ রয়েছে। খোদার অস্তিত্বের বহু প্রমাণ প্রসঙ্গে আলোচিত হয়েছে। কেয়ামত, জাহান্নাম এবং জাহান্নামের বিভিন্ন অবস্থারও আলোচনা রয়েছে ওই সূরায়।
৬৮. সূরা কলাম (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৫২, রুকু ২)
নবী মুহাম্মদের গুণ-গরিমা এবং উত্তম আখলাক চরিত্র ও মান-মর্যাদার বিবরণ রয়েছে এ সূরায়। নবীজির দুশমনদের চারিত্রিক নীচতা, জঘন্যতা ও চিন্তার স্থূলতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সূরায় একটি বাগানের মালিক এবং মালের হক আদায় না করায়, গরিব-দুঃখীকে তাদের প্রাপ্য না দেওয়ায় বাগান-মালিকদের নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা আলোচিত হয়েছে। এরপর আখেরাতে কাফেরদের মন্দ পরিণতি এবং মুত্তাকিদের উত্তম পরিণাম সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। সূরার শেষে নবীজিকে মোশরেকদের কষ্টে সবরের উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
৬৯. সূরা হাক্কাহ (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৫২, রুকু ২)
সূরার সূচনায় কেয়ামতের ভয়াবহতা এবং আদ, সামুদ ও লুত জাতির পরিণতির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এরপর সূরায় কেয়ামত-পূর্ব বিভিন্ন ঘটনার আলোচনা করা হয়েছে। নেককারদের ডান হাতে আমলনামা এবং হতভাগা বদকারদের বাম হাতে আমলনামা প্রদানের বিষয়েও আলোকপাত করা হয়েছে। এরপর জাহান্নামে কাফেরদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। নবী মুহাম্মদের নবুয়তের সত্যতার আলোচনার মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।

৭০. সূরা মাআরিজ (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৪৪, রুকু ২)
সূরার সূচনায় কেয়ামতের আলোচনা রয়েছে। সূরায় মানুষের স্বভাব ও প্রকৃতির বিবরণও রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পুনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষমÑ এ ঘোষণার মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭১. সূরা নুহ (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ২৮, রুকু ২)
নবী নুহ (আ.) এর দীর্ঘকাল মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা এবং এর বিপরীতে সম্প্রদায়ের আচরণ প্রসঙ্গে সূরায় আলোকপাত করা হয়েছে। সূরায় নুহ নবীর জবানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ফজিলত ও ফায়দা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন, বৃষ্টি দেবেন, সহায়সম্পত্তি ও সন্তানসন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, বাগবাগিচা এবং নদনদীর ব্যবস্থা করে দেবেন। কাফেরদের ধ্বংস এবং মোমিনদের জন্য মাগফেরাতের দোয়ার মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭২. সূরা জিন (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ২৮, রুকু ২)
কোরআনের অমীয় বাণী শুনে মুগ্ধ হয়েছিলÑ এমন একদল জিনের আলোচনা রয়েছে ওই সূরায়, যারা কোরআনের সত্যতা স্বীকার করে ধন্য হয়েছিল। এ দলটি শুধু নিজেরাই ঈমান গ্রহণ করেনি, বরং ফিরে গিয়ে নিজ সম্প্রদায়কেও ঈমানের দাওয়াত দেয়। জিনদের আলোচনা প্রসঙ্গে এ সূরায় নাবীয়ে আরাবি (সা.) এর দাওয়াত প্রসঙ্গেও আলোকপাত করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আদিষ্ট হয়ে নিজ সম্পর্কে নবীজি (সা.) বলেন, আমি তো শুধু আল্লাহকে ডাকি, তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক করি না; উপকার-ক্ষতি কোনো কিছুই আমার হাতে নেই। আমার কাজ তো হলো আল্লাহর পয়গামকে তোমাদের পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া আর আল্লাহ জানেন, আমি তাঁর পয়গামকে তাঁর বান্দাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। গায়েবের বিষয়ে শুধু আল্লাহই জানেনÑ মর্মে আলোচনার মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭৩. সূরা মুজ্জাম্মিল (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ২০, রুকু ২)
সূরায় নবীজীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। যেমনÑ নবীজির সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহর দিকে ছুটে চলা, ইবাদত-বন্দেগি, রাতের তাহাজ্জুদ ও রোনাজারি, কোরআনের পাঠ ও তেলাওয়াত, দ্বীনের জন্য মুজাহাদা ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ। নবীজিকে মোশরেকদের কষ্টে সবর করার হুকুম দেওয়া হয়েছে। ফেরাউন ও তার বাহিনীর পরিণতি শুনিয়ে নবী বিরোধীদের সতর্ক করা হয়েছে। সূরার শেষে মুসলিমদের প্রতি আল্লাহর সহজীকরণ এবং কাজ লাঘবের বর্ণনা রয়েছে।
৭৪. সূরা মুদ্দাসসির (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৫৬, রুকু ২)
আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আহ্বানের বার্তা দিয়ে সূরার সূচনা। নবীজির দাওয়াতের পথে যারা বাধা দিত, তাদের পরিণাম সম্পর্কেও বলা হয়েছে সূরায়। কেয়ামতের দিন জান্নাতি এবং জাহান্নামিদের অবস্থা কী হবে, সে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। উত্তম উপদেশ গ্রহণের নসিহত করে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭৫. সূরা কেয়ামা (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৪০, রুকু ২)
সূরার মূল আলোচ্য বিষয় পুনরুত্থান এবং মৃত্যুপরবর্তী জীবন। সূরায় কেয়ামতের ভয়াবহতা, কঠিনতা এবং শাস্তির বিবরণ দেওয়া হয়েছে এবং মৃত্যুর সময় মানুষের যে অবস্থা হবে, তার একটি চিত্র আঁকা হয়েছে। মানুষকে আল্লাহ অবশ্যই পুনরুত্থিত করবেনÑ মর্মে ঘোষণার মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭৬. সূরা দাহর (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৩১, রুকু ২)
সূরাটিতে জান্নাতের বিভিন্ন নাজ-নেয়ামত এবং জাহান্নামের শাস্তির বিবরণ রয়েছে। মানুষের প্রতি আল্লাহ তায়ালার বিভিন্ন নেয়ামতের আলোচনার পর বলা হয়েছে, কিছু মানুষ কৃতজ্ঞ আর কিছু অকৃতজ্ঞ। প্রত্যেকেই নিজ কর্মফল লাভ করবে। সবর এবং আল্লাহর গুণকীর্তনের নির্দেশের মাধ্যমে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
৭৭. সূরা মুরসালাত (মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ৫০, রুকু ২)
কেয়ামতের সময়কার ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে এ সূরায়। বারবার বলা হয়েছে, যারা কেয়ামত ও পুনরুত্থানকে অস্বীকার করে, তাদের ধ্বংস অনিবার্য। মুত্তাকি এবং অপরাধীদের শেষ পরিণতির বিবরণ দিয়ে সূরাটি সমাপ্ত হয়েছে।

রাশেদুর রহমান
পেশ ইমাম ও খতিব, বুয়েট সেন্ট্রাল মসজিদ

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on skype
Skype
Share on email
Email

আরো সংবাদ পড়ুন

সংবাদ আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০

বিভাগীয় সংবাদ