মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালের রোগশয্যা থেকেই টুইটে ভূয়সী প্রশংসা বঙ্গসন্তানকে …..
উলুবেড়িয়ার ফুলেশ্বরের এক প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল পড়ুয়ার বাজানো মাউথ অর্গানের সুরে মোহিত বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। করোনা আক্রান্ত বিগ বি’র হাসপাতালের বেডে শুয়েই টুইটে স্বীকারোক্তি —
“এই রকম মাউথ অর্গান আগে কখনও শুনিনি। অদ্ভুত, অদ্ভুত, অদ্ভুত!”
সুপারস্টারের প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত উলুবেড়িয়া হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভ্রনীল সরকার। যদিও এখনও সে বিশ্বাস করতে পারছে না যে, অমিতাভ বচ্চনের মতো জগদ্বিখ্যাত চিত্রতারকা, তার বাজানো মাউথ অর্গানের সুরের অকুণ্ঠ তারিফ করেছেন। শুভ্রনীল জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে মোবাইলে টুইট চেক করতে গিয়ে সে দেখে বিগ বি’র এই টুইটটি দেখে।
শুভ্রনীলের দাবি, প্রথমে তার বিশ্বাসই হয়নি। সে ভেবেছিল, এটা কারও ফেক অ্যাকাউন্ট সম্ভবত। কিন্তু পরে ভাল করে ওই টুইট অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে শুভ্রনীল। আর তখনই জানতে পারে, সেটা অমিতাভ বচ্চনেরই টুইটার অ্যাকাউন্ট। এর পর থেকেই শুভ্রনীল সারাদিন প্রচুর ফোন পেয়েছে। এত প্রশংসা পেয়ে আপ্লুত বঙ্গসন্তান। বাবা সুবীর সরকার এবং মা বাসবী সরকারও ছেলের কাছ থেকে এই খবর শুনে খুশি তো বটেই, এবং গর্বিতও।
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা সুবীর সরকারের একমাত্র ছেলে সতেরো বছরের শুভ্রনীল। যার মাউথ অর্গানের হাতেখড়ি হয়েছিল বছর পাঁচেক বয়সেই। মন থেকে ভালবাসা তো ছিলই এই বাদ্যযন্ত্রের প্রতি। পরে এই আসক্তি বাড়তে থাকে অধ্যাবসায়ের সঙ্গে। ধীরে ধীরে মাউথ অর্গান হয়ে ওঠে শুভ্রনীলের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মনের মধ্যেও সযত্নে মাউথ অর্গানের অধ্যাবসায়ের নেশাকেও যত্ন করে বাড়িয়ে তুলতে থাকে শুভ্রনীল। ছোটোবেলা থেকেই বিভিন্ন স্টেজ শো, পাড়ার অনুষ্ঠানে পারফর্ম করা শুভ্রনীল এবার স্বয়ং অমিতাভ বচ্চনের থেকে প্রশংসা অর্জন করে বেশ উচ্ছ্বসিত এই বঙ্গসন্তান।
২০১২ সালে সারা ভারত হারমোনিকা প্রতিযোগিতায় প্রথম হন তিনি। এ বছর আমেরিকার স্টাহ কনভেনশনে বিশ্ব সেরাদের কাছ থেকে হারমোনিকা শেখার স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনার জন্য যেতে পারেননি। ‘ইমেলে সুর রেকর্ড করে পাঠিয়ে নির্বাচিত হই। পুরো স্কলারশিপ পাই। কিন্তু সব বদলে গেল করোনাভাইরাসের জন্য’, হতাশ স্বর শুভ্রনীলের।
অমিতাভের পোস্ট দেখে তিনি প্রথম বলেন বাবা সুবীর সরকারকে। ‘আমার চোখে জল চলে এসেছিল যখন জানতে পারি। বিশ্বাস করতে পারিনি অমিতাভ বচ্চন আমার ছেলের ভিডিয়ো শেয়ার করবেন’, বলছেন উচ্ছ্বসিত সুবীর। বাবার কাছেই হারমোনিকার হাতেখড়ি শুভ্রনীলের। পাঁচ বছর বয়সে নিজে সুর শুনেই হারমোনিকায় তুলে নিয়েছিলেন ‘বড় আশা করে’ আর ‘যা রে যারে উড়ে যারে পাখি’র সুর। পরবর্তীকালে তালিম নিয়েছেন সুকান্ত ঘোষালের কাছে। আর শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখছেন দেবকুমার দের কাছে।
===={{$}}====
মাউথ অর্গানে রাগ সঙ্গীতের সুর তুলেছেন : শুভ্রনীল সরকার
রাগ : সারং মল্লার
তবলায় সঙ্গত করেছেন : শ্রী কিংশুক মুখোপাধ্যায়।
সৌজন্যে : শুভ্রনীল সরকার










